গ্লোব বায়োটেকের করোনা টিকা ‘বঙ্গভ্যাক্স” হতে পারে করোনা টিকায় বাংলাদেশের আশার আলো ।
বাংলাদেশ করোনা টিকা আমদানি করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু আশ্বাস এবং উপহার গ্রহণ ছাড়া বড় মাপের সাফাল্য চোখে দেখার মত নয়। বাংলাদেশে ভারতের সেরাম ইসস্টটউটের কাছ থেকে প্রাপ্ত অক্সফোরডের টিকার মাধ্যমে ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ থেকে সারা দেশে ভ্যক্সিন কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু এপ্রিলের শেষের দিকে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ডের টিকার চালান আসায় অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এর পর রাশিয়া, চায়না, আমেরিকা সহ বিভিন্ন দেশের সাথে টিকা সংগ্রহের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বেশ কিছু টিকা সংগহ করা হয়েছে। কিন্তু তা অপ্রতুল ।
এর আগে দুই ডোজ মিলে প্রায় এক কোটি টিকা দেয়া সম্ভব হয়েছে। এখন টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমও করা বন্ধ রয়েছে । অচিরেই টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ বাস্তবতায় দেশের একটি প্রতিষ্ঠান গ্রোব বায়োটেক কর্তৃক আবিষ্কৃত টিকা 'বঙ্গভ্যাক্স'-এর ট্রায়ালের নীতিগত অনুমোদনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি)। গত বুধবার ১৬ জুন ২০২১ এ সিদ্ধান্তের কথা জানায় সংস্থাটি। এটা একটি আশা জাগানোর মত খবর। এর আগে ১৭ জানুয়ারি নিজেদের উৎপাদিত করোনাভাইরাসের টিকা 'বঙ্গভ্যাক্স' মানবদেহে পরীক্ষা চালানোর অনুমতির জন্য বিএমআরসির কাছে আবেদন করে বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক। অনুমোদনের পর রাজধানীর কোনো একটি বেসরকারি হাসপাতলে ট্রায়লের জন্য স্বচ্ছাসেবকদের ওপর প্রয়োগের কথা।
শর্তপূরণ সাপেক্ষে দেশীয় গ্লোব বায়োটেকের করোনা ভাইরাসের টিকা 'বঙ্গভ্যাক্স'র হিউম্যান ট্রায়ালের নীতিগত অনুমোদনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি)। গত বুধবার (১৬ জুন ২০২১) বিএমআরসির পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়। সন্সথাটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন জানান, সরাসরি অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলা যাবে না। তবে শর্ত দেওয়া হয়েছে। ভুল ত্রুটি ঠিক করলে আমরা অনুমতি দিয়ে দেব। শর্ত পূরণ করলে অনুমোদন দেওয়া হবে। অনুমতি পেলে শিগগিরই মানুষের ওপর দেশীয় এই টিকার ট্রায়াল চালানো হবে।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় এ
পর্যন্ত বিশ্বে মোট ২০১টি টিকা নিয়ে কাজ চলছে। এর মধ্যে চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে
আটটি টিকা। ৩৬টির ট্রায়াল চলছে দ্বিতীয় পর্যায়ের। ৫০টি টিকার ট্রায়াল প্রথম
পর্যায়ে চলছে। বৈশ্বিক এই টিকার দৌড়ে শুরুর দিকে বাংলাদেশও শামিল হয়েছিল অনেকের
চেয়ে আগে। কিন্তু আমাদের নিজস্ব একটি টিকা এটি বাংলাদেশের জন্য কত গোরবের হতে পারে
তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশ সরকারের এ টিকার ট্রায়াল ও অন্যান্য কার্যক্রমে
সহযোগিতা করে এটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিনীত ভাবে অনুরোধ যানাচ্ছি। গ্লোব
বায়োটেকের পক্ষ থেকে জানায় তারা শর্ত মেনে
ট্র্যায়লে যেতে প্রস্তুত আছে। গ্লোব বায়োটেকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তারা প্রতি
মাসে এক কোটি ডোজ প্রস্তুত করতে পারবে। এটা যদি আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত হয় তা হলে এটি
রফতানি করে দেশের সম্মান ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। আমি আশা করি টিকা
'বঙ্গভ্যাক্স' সব রকমের ট্রায়ল অতক্রম করে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করে আমাদের
দেশের ও আন্তর্জাতিক ভাবে করোনা ভ্যাক্সিনের অভাব দূর করতে অবদান রাখতে সামর্থ
অর্জন করবে। (লেখকঃ জলিল মাহমুদ, শিক্ষক ও কলাম লেখক)
0 Comments