করোনা মহামারীঃ আবেগী মানুষের ঈদ শেষে কর্মক্ষেত্রে ফেরা ও দুর্ভোগ।
সারা বছর ঢাকা শহরে কর্মক্লান্ত জীবন কাটিয়ে ঈদে বাড়ি যাবে প্রিয় মানুষের ও প্রিয় জায়গার সান্নিধ্যে - এটাই বাংলাদেশের বাস্তবতা। যদিও করোনা মহামারীর বিস্তার ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কথা ছিল, জনসমাবেশ এরিয়ে চলার কথা ছিল, ভ্রমণ এরিয়ে চলা উচিত ছিল। কিন্ত কিছুই রক্ষা করতে পারি নাই আমরা আবেগের কাছে। পথে পথে বাঁধা, লক ডাউন, দূর পাল্লার বাস, লঞ্চ, ট্রেন বন্ধ কিছুতেই জনস্রোত ঢাকা থেকে গ্রামের দিকে ঢেকানো গেল না। ভাব টা এমন যে পায়ে হেঁটেই চলে যাবে নিজ গ্রামে। ফলে কি ঘটেছে, গত কয়েকদিন ধরে। আমরা অসহায়ের মত লক্ষ্য করলামঃ ফেরিতে হজার হজার মানুষের ভিড়, ঠেলা ঠেলি, ঠাঁসাঠাসি , অধিক খরচ, দূর্ঘটনা, ভিড়ের চাপে মৃত্যু – মোট কথা বাড়ি ফেরা মানুষেরা এক চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
১২ এপ্রিল ২০২১ খ্রীঃ জনৈক হামেজ আলীর সাথে কথা হয়, তিনি তার দূর্ভোগ বর্ননা করে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন যেখানে তিনি গাড়িতে স্বাভাবিক ভাবে ৬০০ টাকায় বাড়ি আসতে পারে সেখানে তার খরচ হয়েছে ২২০০ টাকা। ঈদ মানেই বাড়ি ফেরা, মায়ের কাছে আসা, প্রিয় জনের সাথে দেখা সাক্ষাত, হৈ হুল্লুর, বাড়ি ভর্তি মানুষ। তারপরও আমাদের মনে রাখা উচিত ছিল করোনার এই মহামারী রোধে আমাদের সচেতন থাকা উচিত ছিল। করোনার দ্বিতীয় ঢেঊ আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত ও নেপাল লন্ড ভন্ড হয়ে যাচ্ছে, বেশ কিছুদিন ধরে ঢাকা শহরেও করোনা রোগির সংখ্যা, মৃতুর সংখা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। তারপর ভারতীয় ভ্যারিয়ান্ট বাংলাদেশও ধরা পরেছে এই ভয় আমাদের সতর্ক করতে পারে নাই। আমরা আবেগি মানুষ। যুদ্ধ জয়ের মত নিজ বাড়িতে ঈদ করতে এসেই পড়েছি।
কিন্তু এবার স্লোগান ছিল যে যেখানে আছি সে সেখানেই ঈদ করবো, নিজে সুস্থ্য থাকব, অন্যকে সুস্থ্য রাখব, ভিড় এড়িয়ে চলব, সব সময় মাস্ক পড়ব। সব কিছুই আবেগের কাছে হার মানল। এখন আবার কর্মক্ষেত্র ঢাকায় ফেরার পালা। এর মধ্যে খারাপ খবর হলো বিপজ্জনক ভারতীয় করোনা ভেরিয়ান্ট বাংলাদেশে ঢাকা, যশোর এ সনাক্ত হয়েছে। যে ভাবেই হোক বাড়ি যাব ই – এই মানুষিকতার মানুষেরা বাড়ি এসে পড়েছে। এখন তাদের নিরাপদে কর্মস্থলে ফিরে যাওয়া নিয়ে আবার জন দুর্ভোগ অপেক্ষা করছে। সাহস করে একটি কথা বলেই ফেলি- কর্মস্থলে ফেরা মানুষের দুর্ভোগ লাগবের জন্য সীমিত পরিসরে কঠোস স্বাস্থ্য বিধি মেনে, কঠোর নজরদারীতে দূর পাল্লার বাস ছাড়া যায় কিনা –এটি সরকার ভেবে দেখবেন। এটা নিশ্চই সীমিত সময়ের জন্য। এতে জন দুর্ভোগ, ভিড় , স্বাস্থ্য বিধি এ সব রক্ষা করা সহজ হবে বলে আমি মনে করি।
পরিশেষে, সকলের প্রতি নিবেদন সচেতন হোন, মাস্ক পড়ুন, ভিড় এরিয়ে চলুন, নিজে সুস্থ্য থাকুন অপরকে সুস্থ্য রাখুন।
(জলিল মাহমুদ শিক্ষক ও কলাম লেখক)
0 Comments